চাহিদার স্থিতিস্থাপকতা কাকে বলে
| | | |

চাহিদার স্থিতিস্থাপকতা কাকে বলে?? সকল প্রকারভেদ ও সূত্র

আপনি কি জানেন চাহিদার স্থিতিস্থাপকতা কাকে বলে?? স্বাধীন চলকের পরিবর্তনের ফলে অধিন চালকের যে পরিবর্তন হয় এর অনুপাতকে বলা হয় স্থিতিস্থাপকতা। এই আর্টিকেলে চাহিদার দাম স্থিতিস্থাপকতা কাকে বলে এবং চাহিদার সকল প্রকারভেদ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।

চাহিদার স্থিতিস্থাপকতা কাকে বলে

চাহিদার স্থিতিস্থাপকতার বিভিন্ন প্রকারভেদ রয়েছে সেই প্রকারভেদ গুলো কি এবং চাহিদার স্থিতিস্থাপকতা কাকে বলে , স্থিতিস্থাপকতা কি সে সকল বিষয় নিয়ে চলুন আমরা ঝটপট দেখে আসি।

চাহিদার স্থিতিস্থাপকতা কাকে বলে

আপনি কি জানেন যে চাহিদা স্থিতিস্থাপকতা কাকে বলে ?? স্বাধীন চলকের শতকরা পরিবর্তনের ফলে অধীর চরকের শতকরা পরিবর্তনের হারকে মূলত স্থিতিস্থাপকতা বলা হয়। মনে করে স্বাধীন চলক x এবং অধীন চলক y। X পরিবর্তনের ফলে y এর যে পরিবর্তন ঘটে তার শতকরা অনুপাত কে বলা হবে স্থিতিস্থাপকতা।

আরো পড়ুন : মানবিক বিভাগের সেরা সাবজেক্ট এর তালিকা কোন সাবজেক্ট পড়লে কি হওয়া যায়

স্থিতিস্থাপকতার প্রশ্নে উঠলেই এইখানে চাহিদার আমরা শুনতে পাই চাহিদার স্থিতিস্থাপকতা। চাহিদার স্থিতিস্থাপকতা বলতে বোঝায় দামের শতকরা পরিবর্তনের ফলে চাহিদার যে শতকরা পরিবর্তন ঘটে তার অনুপাত অর্থাৎ দামের পরিবর্তনের ফলে চাহিদার কিরূপ পরিবর্তন ঘটছে এই দুইয়ের অনুপাতকেই বলা হয় চাহিদার স্থিতিস্থাপকতা।

চাহিদার স্থিতিস্থাপকতা কাকে বলে

সংজ্ঞা: দামের শতকরা পরিবর্তনের ফলে চাহিদা শতকরা পরিবর্তনের হারকে বলা হয় চাহিদার স্থিতিস্থাপকতা অথবা চাহিদার দাম স্থিতিস্থাপকতা।

চাহিদার দাম স্থিতিস্থাপকতা সূত্র হলো ep= ∆Q/∆P× P/Q। নিচে দেখুন একটি সূত্র দেওয়া রয়েছে এই সূত্রটি সাহায্যে চাহিদার স্থিতিস্থাপকতা নির্ণয় করতে হয়।

চাহিদার স্থিতিস্থাপকতা কাকে বলে

আশা করছি আপনারা উপরের এই চিত্র দেখে বুঝতে পেরেছেন স্থিতিস্থাপকতার সূত্র সম্পর্কে। যারা অনার্সে অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী রয়েছেন তাদের জন্য এই স্থিতিস্থাপকতার সূত্রটি জানা খুবই জরুরী এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র। এই সূত্রের সাহায্যে আপনারা যে কোন দাম এবং চাহিদার সাহায্যে সেই স্থিতিস্থাপকতা নির্ণয় করতে পারবেন। এবার চলুন আমরা দেখে আসি চাহিদার দাম স্থিতিস্থাপকতা পরিমাপের পদ্ধতি গুলো।

চাহিদার দাম স্থিতিস্থাপকতা পরিমাপের পদ্ধতি

চাহিদার দামের স্থিতিস্থাপকতার নির্ণয়ের ভিন্ন ভিন্ন পদ্ধতি রয়েছে আপনারা যে কোন পদ্ধতি অবলম্বন করেই চাহিদার দাম করতে পারবেন চাহিদার দাম স্থিতিস্থাপকতা নির্ণয়ের পদ্ধতি কে ইংরেজিতে বলা হয় different methods of measuring price elasticity of demand।

  • সংখ্যা সূচক বা শতকরা পদ্ধতি
  • বিন্দু পদ্ধতি বা জ্যামিতিক পদ্ধতি
  • বৃত্তচাপ পদ্ধতি
  • মোট আয় কিংবা ব্যয় পদ্ধতি

সংখ্যা সূচক অথবা শতকরা পদ্ধতি

সংখরাচক বা শতকরা পদ্ধতিতে দাম ও চাহিদার পরিমাণে শতকরা পরিবর্তনের সংখ্যা বাচক মান নির্ণয়ের মাধ্যমে স্থিতিস্থাপকতার পরিমাপ করা হলে তাকে বলা হয় সংখ্যা সূচক কিংবা শতকরা পদ্ধতি।

আরো পড়ুন: এই গেম খেলে ১০০০ টাকা আয় করা যায় বিকাশে

সংখ্যা সূচক পদ্ধতিতে চাহিদার দাম স্থিতিস্থাপকতার মূলত দাম এবং চাহিদার পরিমাণে শতকরা পরিবর্তনের হার কে নির্দেশ করে এবং দামের শতকরা পরিবর্তন দিয়েই চাহিদার পরিমাণে শতকরা পরিবর্তন ভাগ করে দাম স্থিতিস্থাপকতা নির্ণয় করা হয়।

  • সংখ্যা সূচক বা শতকরা পদ্ধতিতে Ep=1 হলে দামের শতকরা পরিবর্তন এবং চাহিদা শতকরা পরিবর্তনের হার সমান হয়।
  • সংখ্যা সূচক বা শতকরা পদ্ধতিতে Ep>1 হলে দামি শতকরা পরিবর্তনের তুলনায় চাহিদার পরিমাণে শতকরা পরিবর্তন অনেক বেশি হয়।
  • সংখ্যা সূচক বা শতকরা পদ্ধতিতে যদি Ep<1 হয় তাহলে দামের শতকরা পরিবর্তনের তুলনায় চাহিদা শতকরা পরিবর্তনের হার অনেক কম হয়।
  • সংখ্যা সূচক বা শতকরা পদ্ধতিতে যদি Ep=0 হয় তাহলে দামের পরিবর্তনের ফলে চাহিদার কোন পরিবর্তন হয় না।
  • সংখ্যা সূচক বা শতকরা পদ্ধতিতে যদি Ep=~ হয় তাহলে দামের কোন রকম পরিবর্তন ছাড়াই চাহিদার পরিমাণের পরিবর্তন ঘটে।

আশা করছি আপনারা বুঝতে পেরেছেন সংখ্যার সূচক বা শতকরা সম্পর্কে এই পদ্ধতিতে খুব সহজেই চাহিদার দাম স্থিতিস্থাপকতা নির্ণয় করা সম্ভব এবার চলুন আমরা দেখে আসি বিন্দু পদ্ধতি।

বিন্দু পদ্ধতি অথবা জ্যামিতিক পদ্ধতি

বিন্দু পদ্ধতি অথবা জ্যামিতিক পদ্ধতিতে একটি চাহিদা রেখা নির্দিষ্ট কোন বিন্দুকে কেন্দ্র করে চাহিদার দাম স্থিতিস্থাপকতা নির্ণয় করা হয়। যেমন যে পদ্ধতিতে একটি চাহিদা রেখা নির্দিষ্ট কোন বিন্দুকে কেন্দ্র করে দাম স্থিতিস্থাপকতা পরিমাপ করা হয়।

তাকেই বলা হয় বিন্দু পদ্ধতি অথবা জ্যামিতিক পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে এটি সরলরেখা অঙ্কিত করা হয় তারপর সরলরেখার ওপরে যে কোন একটি বিন্দুকে কেন্দ্র করে সেই বিন্দুর স্থিতিস্থাপকতা নির্ণয় করা হয়।

আরো পড়ুন : HSC 2025 পরীক্ষা পেছানো নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত

আশা করছি আপনারা সকলে বুঝতে পেরেছেন বিন্দু পদ্ধতি অথবা জ্যামিতিক পদ্ধতিতে চাহিদার দাম স্থিতিস্থাপকতা নির্ণয়ের পদ্ধতি সম্পর্কে এবার চলুন আমরা দেখে আসি চাহিদার দাম স্থিতিস্থাপকতা পরিমাপের বৃত্তচাপ পদ্ধতি।

চাহিদার স্থিতিস্থাপকতা বৃত্তচাপ পদ্ধতি

চাহিদা রেখা দুইটি বিন্দুর মধ্যবর্তী অংশের গড় নিয়ে স্থিতিস্থাপকতা পরিমাপ করা হলে তাকেই বলা হয় বৃত্তচাপ স্থিতিস্থাপকতা। অনেক সময় একে আবার বলা হয় খন্ড নমনীয়তা। এই পদ্ধতিতে প্রাথমিক দামের সাথে নতুন দাম যোগ করে দামের গড় বের করা হয় আবার প্রাথমিক পরিবারের সাথে নতুন পরিমাণ যোগ করেও পরিমাণের গড় নির্ণয় করা হয়। এরপর দাম এবং চাহিদার পরিবারের পরিবর্তনের অনুপাতকের দাম আর চাহিদার পরিমাণের গড় অনুপাত দিয়ে ভাগ করা হয়। সূত্রটি নিচে দেওয়া হল দেখে নিন।

চাহিদার দাম স্থিতিস্থাপকতা কাকে বলে

আশা করছি আপনারা সকলে বুঝতে পেরেছেন চাহিদার দাম স্থিতিস্থাপকতা বৃত্তচাপ পদ্ধতি সম্পর্কে। এই পদ্ধতিতে খুব সহজেই চাহিদার দাম স্থিতিস্থাপকতা নির্ণয় করা সম্ভব এবার চলুন আমরা দেখে আসি সর্বশেষ পদ্ধতির দাম স্থিতিস্থাপকতা পরিমাপের আয় ও ব্যয় পদ্ধতি।

চাহিদার আয় স্থিতিস্থাপকতা পরিমাপ পদ্ধতি

এই পদ্ধতিটি সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় চাহিদার দাম স্থিতিস্থাপকতা নির্ণয়ের আই কিংবা ব্যয় পদ্ধতি। যে পদ্ধতিতে ক্রেতার মোট ব্যয়ের পরিবর্তনের ওপর ভিত্তি করে দাম স্থিতিস্থাপকতা পরিমাপ করা হয় তাকেই বলা হয় মোট ব্যয় পদ্ধতি।

আরো পড়ুন : ওয়ালটনে ড্রাইভার নিয়োগ – ওয়ালটন শোরুমে চাকরি ২০২৫

আবার অপরদিকে বিক্রেতার মোট আয় পরিবর্তনের উপর ভিত্তি করে স্থিতিস্থাপকতা পরিবার করা হয় এজন্য এই ব্যয় পদ্ধতিকে আবার আয় পদ্ধতি ও বলা হয়। আমরা জানি যে কোন পণ্যের দাম কমলে কিংবা বাড়লে ওই ফোনে চাহিদার পরিমাণ যথাক্রমে বাড়ে কিংবা কমে

এর ফলে ক্রেতার মোট ব্যয়ের পরিবর্তন ঘটে তার মোট ব্যয় যেহেতু মোট আয়ের পরিবর্তন ঘটে। দামের পরিবর্তনের ফলে ক্রেতার মোট ব্যয়ের পরিবর্তনের উপর ভিত্তি করেই মূলত দাম স্থিতিস্থাপকতা নির্ণয় করা যায় এর মাধ্যমে আবার মাঝে মাঝে বোনের প্রকৃতিও নিরূপণ করা সম্ভব।

চাহিদার আয় স্থিতিস্থাপকতা পরিমাপ পদ্ধতি

  • যদি দাম কমে যায় অর্থাৎ ক্রেতার মোট অপরিবর্তিত থাকে তবে দাম স্থিতিস্থাপকতা এর মান এককের সমান হবে। অর্থাৎ মোট ব্যয় যদি কোন পরিবর্তন না হয় তাহলে EP=1।
  • দাম কমার ফলে যদি ক্রেতার মোট ব্যয় এর পরিমাণ বৃদ্ধি পায় তাহলে স্থিতিস্থাপকতা এর মান একের চেয়ে বেশি হবে। অর্থাৎ Ep >1।
  • দাম কমার ফলে যদি ক্রেতার মোট ব্যয় হ্রাস পায় তাহলে স্থিতিস্থাপকতা মান হবে ep<1।

প্রিয় পাঠক বৃন্দ আশা করছি আপনারা বুঝতে পেরেছেন চাহিদার দাম স্থিতিস্থাপকতা নির্ণয়ের পদ্ধতি সম্পর্কে এবার চলুন আমরা দেখে আসি চাহিদার আড়াআড়ি স্থিতিস্থাপকতা কি??

চাহিদার আড়াআড়ি স্থিতিস্থাপকতা কি

আপনি কি জানেন যে চাহিদার আড়াআড়ি স্থিতিস্থাপকতা কি?? চাহিদার আড়াআড়ি স্থিতিস্থাপকতাকে পারস্পারিক স্থিতিস্থাপকতাও বলা হয়। একটি পণ্যের চাহিদার পরিমাণ তার সাথে সম্পর্কিত যদি অন্যান্য পণ্যের দামের উপর নির্ভর করে থাকে তাহলে এরূপ স্থিতিস্থাপকতাকে বল হয় চাহিদার আড়াআড়ি স্থিতিস্থাপকতা।

আরো পড়ুন: গ্যাকোজিমা মলম এর উপকারিতা ২ দিনেই দাদ হবে দূর

একটি পণ্যের দামের শতকরা বা আপেক্ষিক পরিবর্তনের ফলে অন্য আরেকটি পণ্যের চাহিদার পরিমাণে শতকরা পরিবর্তনের হারকে চাহিদার আড়াআড়ি স্থিতিস্থাপকতা বলা হয় আমরা মনে করি x এবং y দুইটি পণ্যের নাম এখন যদি x পন্যের চাহিদার পরিমাণ y ফোনের দাম দ্বারা প্রভাবিত হয় তাহলে এরূপ স্থিতিস্থাপকতাকে চাহিদার আড়াআড়ি স্থিতিস্থাপকতা বলা হয়।

চাহিদার আড়াআড়ি স্থিতিস্থাপকতা কি

যেমন উদাহরণস্বরূপ বাজারে কলমের দাম বেড়ে গেছে এখন কলমের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে খাতা চাহিদা অনেকটা কমে গেছে কারণ কলমের সাহায্যে খাতাতেই আমরা লিখালিখি করি। যদি কলমের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে কোনোভাবে খাতার চাহিদা কমে যায় অথবা কলমের দাম কমে যাওয়ার কারণে খাতার চাহিদা বেড়ে যায় তাহলে এমন সম্পর্ককে বলা হবে চাহিদার আড়াআড়ি স্থিতিস্থাপকতা।

আশা করছি আপনারা সকলে বুঝতে পেরেছেন চাহিদার আড়াআড়ি স্থিতিস্থাপকতা কি। নিচে দেখুন চাহিদার আড়াআড়ি স্থিতিস্থাপকতার সূত্রদাও রয়েছে আপনারা এই সূত্রের সাহায্যে খুব সহজেই নির্ণয় করতে পারবেন যে পণ্যটি কেমন। যদি চাহিদার আড়াআড়ি স্থিতিস্থাপকতা র মান Ec>0 হয় তাহলে পণ্যটি হবে বিকল্প পণ্য আর যদি চাহিদার আড়াআড়ি স্থিতিস্থাপকতার মান Ec<0 হয় তাহলে পণ্যটি হবে পরিপূরক।

চাহিদার আড়াআড়ি স্থিতিস্থাপকতা

আশা করছি আপনারা সকলে বুঝতে পেরেছেন চাহিদার আড়াআড়ি স্থিতিস্থাপকতা সূত্র সম্পর্কে এই সূত্রটি সাহায্যে আপনারা খুব সহজেই নির্ণয় করতে পারবেন পণ্যের প্রকৃতি কেমন পণ্যের প্রকৃতি আসলে বিকল্প নাকি পরিপূরক।

লেখকের শেষ কথা

প্রিয় পাঠক বৃন্দা আজকের এই আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করলাম যে চাহিদার দাম স্থিতিস্থাপকতা কাকে বলে ,চাহিদার আড়াআড়ি স্থিতিস্থাপকতা কি, স্থিতিস্থাপকতা কাকে বলে , স্থিতিস্থাপকতা পরিমাপের পদ্ধতি গুলো কি কি।

অর্থাৎ আজকের এই আর্টিকেলে শুধুমাত্র স্থিতিস্থাপকতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি আপনি যদি অনার্স অর্থনৈতিক বিভাগের শিক্ষার্থী হয়ে থাকেন তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য খুবই জরুরী আশা করছি আজকের মাধ্যমে আপনারা প্রত্যেকে উপকৃত হয়েছেন।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *