রাম ছাগল কত দিনে বাচ্চা দেয় এবং বাচ্চার দাম কত
রাম ছাগল কত দিনে বাচ্চা দেয়? রামছাগল হলো বিদেশী জাতের ছাগল। রামছাগল অতি দ্রুত বাচ্চা দেয় এই জন্য গবেষকরা বলেন রাম ছাগল লালন পালন করলে অতি দ্রুত লাভবান হওয়া যায়। আজকের এই আর্টিকেল আমরা রামছাগল কতদিনে বাচ্চা দেয় এবং বাচ্চার দাম কত, রামছাগল চেনার উপায় কি রাম ছাগলের বাসস্থান ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।

রাম ছাগল লালন পালন করে অধিক মুনাফা অর্জন করতে চাইলে আজকের এই আর্টিকেলটি সম্পন্ন করতে থাকুন কিভাবে লালন পালন করলে দ্রুত রামছাগল বড় হবে এবং বাচ্চা দিবে সে সমস্ত বিষয় নিয়ে আজকের এই আর্টিকেলে আলোচনা করা হবে চলুন ঝটপট দেখে নেওয়া যাক রামছাগল কত দিনে বাচ্চা দেয় এবং বাচ্চার দাম কত। রামছাগল চেনার উপায় কি এবং রাম ছাগলের বাসস্থান ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে প্রচুর রাম ছাগল দেখতে পাওয়া যায়। বাংলাদেশে বিভিন্ন প্রজাতির ছাগল রয়েছে তবে তার মধ্যে সবচেয়ে উন্নত হলো রাম ছাগল। এটি ভারতের উত্তরপ্রদেশের যমুনা গঙ্গা এবং চম্বল নদীর মধ্যবর্তী এটা জেলা থেকে আগ্রা ও মাথুরা জেলায় দেখা যায়।
এই জন্য রাম ছাগলকে বিদেশি ছাগল বলা হয় রামছাগল অতি দ্রুত বাচ্চা দেয় এবং বংশবিস্তার করে যার ফলে রাম ছাগল লালন পালন করে অতি দ্রুত মুনাফা অর্জন করা যায়। আমাদের দেশে বেকারের সংখ্যা অনেক বেশি আসল কথায় মানুষ বেকার নয় বরং আমাদের দেশে কর্মসংস্থানের অভাব রয়েছে এই জন্য মানুষ কর্মসংস্থানের অভাবে বেকারত্ব জীবন যাপন করছেন।
আরো পড়ুন: দাউদ এর সবচেয়ে ভালো মলম কোনটি? বিস্তারিত জানুন
এখন বেকারত্ব জীবনকে দূর করে রাম ছাগল লালন পালন করুন এবং অতি দ্রুত বেশি মুনাফা অর্জন করুন গবেষকরা বলেন রাম ছাগল লালন পালন করে দ্রুত লাভবান হওয়া যায় কারণ এরা মাত্র কয়েক মাসের মধ্যেই বাচ্চাদের শুরু করে যার ফলে দ্রুত ছাগলের পরিমাণ বাড়তে থাকে।
রাম ছাগলের খাবার তালিকা
রাম ছাগলের খাবার তালিকা সম্পর্কে জানতে চান? রাম ছাগল হল তৃণভোজী প্রাণী এরা বিভিন্ন ধরনের খাবার খেতে ভালোবাসে এদেরকে উচ্চ ক্যালোরি এবং কার্বোহাইড্রেট যুক্ত খাবার খেতে দিলে এরা দ্রুত বড় হয়ে উঠবে। আপনারা অনেকেই জিজ্ঞাসা করেন ছাগলকে দ্রুত কোন খাবার খেতে দিলে এদের ওজন বাড়ে এবং দ্রুত বড় হয়?
রাম ছাগলকে দ্রুত বড় করার জন্য সঠিক খাদ্য তালিকা তৈরি করতে হবে যত্ন নিতে হবে গোসল করাতে হবে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন বাসস্থানের জায়গা দিতে হবে। পাশাপাশি আরও কিছু খাবার রয়েছে যা ছাগলটা খেতে পছন্দ করে নিজে দেখে নিন ছাগলের পছন্দনীয় এবং রাম ছাগলের খাবার তালিকা।
- শাকসবজি : গাজর, পুই শাকের পাতা, মুলার পাতা, টমেটো, ফুলকপির পাতা।
- খর
- ঘাস
- ভাত
- ভাতের মাড়
- ওগাছা শাক সবজি
- কাঠাল গাছের পাতা
- দানাদার খাদ্য
- ফল মূল
- ভুট্টা
রাম ছাগলকে বেশি বেশি ক্যালোরি এবং কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ খাদ্য খেতে দিলে তাদের দ্রুত ওজন বৃদ্ধি পাবে এবং তারা বড় হতে থাকবে। তাদের খাদ্য তালিকায় বিভিন্ন পুষ্টিকর খাদ্য উপাদান রাখতে হবে। যেমন ভাত ফলমূল দানাদার খাদ্য আগাছা শাকসবজি গাছের পাতা। তারা তৃণভোজী প্রাণী তারা পাতা, শাকসবজি খেয়ে বেঁচে থাকে। কিন্তু তাদের সঠিক পুষ্টির জন্য ফলমূল, ভুট্টা, দানাদার খাদ্য খেতে দেওয়া খুবই জরুরী। আশা করছি আপনারা বুঝতে পেরেছেন রামছাগলের খাবার তালিকা সম্পর্কে এবার চলুন ঝটপট দেখে আসি কোন খাবার খেলে রাম ছাগলের ওজন বাড়বে।
কোন খাবার খেলে রাম ছাগলের ওজন বাড়বে
আপনি কি জানেন কোন খাবার খেলে রাম ছাগলের ওজন বাড়বে? শুধুমাত্র খর ঘাস এবং শাকসবজি খাওয়ালে রাম ছাগলের ওজন বাড়বে না তাকে পুষ্টিকর প্রোটিন কার্বোহাইড্রেট এবং ভিটামিন সম্পূর্ণ খাবার খেতে দিতে হবে। ছাগলের ওজন বৃদ্ধি করতে প্রোটিন কার্বোহাইড্রেট ভিটামিন সহ খনিজ উপাদান সমৃদ্ধ খাবার প্রয়োজন। যেমন:
- কুমড়া
- ভুট্টা
- গমের খই
- সয়াবিন
- সরিষার তেল
- চাউল
- চিনি
- তেলাপিয়া মাছ
- তরমুজ
- মাছের গুড়ো
- গাজর
- কাঠাল
- আলু
- সিম
- তুলসী পাতা
- শিমলাবেল
- মুগের ডাল
ওপরের এই খাবারগুলো থেকে ভরপুর প্রোটিন কার্বোহাইড্রেট সহ বিভিন্ন ভিটামিন ও খনিজ উপাদান পাওয়া যায়। সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার উপরের এই খাবারগুলো রামছাগলকে খাওয়াতে হবে এতে তার ওজন দ্রুত হারে বৃদ্ধি পেতে থাকবে। পশুপাখি লালন পালন করে বিক্রি করলে বেশি মুনাফা লাভ করা যায়। যারা রাম ছাগল লালন পালন করেন তাদের জন্য আজকের এই পোস্টটি খুব উপকারী আশা করছি আপনারা বুঝতে পেরেছেন কোন খাবার খেলে রাম ছাগলের ওজন বাড়বে এবার চলুন দেখে নেওয়া যাক রাম ছাগল পালন পদ্ধতি।
রাম ছাগল পালন পদ্ধতি
ছাগলের মধ্যে বিভিন্ন জাত রয়েছে তার মধ্যে উন্নত জাত হলো রাম ছাগল। ভারতের উত্তরপ্রদেশে রাম ছাগল সবচেয়ে বেশি দেখতে পাওয়া যায়। আমাদের দেশে অনেকেই ছাগল লালন পালন করে কিন্তু অনেকেই জানে না কিভাবে রামছাগল লালন পালন করতে হয় অথবা রাম ছাগল পালন পদ্ধতি কি।
রাম ছাগল পালন করে বেশি মুনাফা অর্জন করা যায় তাই এটি নিঃসন্দেহে একটি লাভজনক ব্যবসা। রামছাগলের একটি খামার তৈরি করলে বেকারত্বের হার কমবে। রামছাগল দ্রুত বড় হয় এবং এদের বংশবিস্তার ঘটে এরা দ্রুত বাচ্চা দিতে শুরু করে যার ফলে ছাগলের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়।
আরো পড়ুন: জন্মদিনের কেক রেসিপি দেখুন এই পোস্টে
এইজন্য গবেষকরা রামছাগল পালন পদ্ধতিকে লাভ জনক ব্যবসা বলে অভিহিত করেছেন। আজকের এই আর্টিকেলে আমরা আপনাদের সাথে রাম ছাগল পালন পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করব যারা নতুন ছাগল লালন পালন করছেন তারা নিচে দেখে নিন পালন পদ্ধতি।
ছাগলের ঘর নির্মাণের শর্ত
ছাগলের ঘর পূর্ব পশ্চিম লম্বালম্বী এবং দক্ষিণ দিকে খোলার স্থানে নির্মাণ করতে হবে এতে ঘরে আলো বাতাস প্রবেশ করবে। বাসায় ছাগল লালন পালন করলে বাসায় বেশি বেশি গাছপালা লাগাতে হবে এতে ছাগলের খাবারের সংকট দেখা দিবে না। ছাগলের খামারে তিন দিকে ঘেরা থাকবে এবং সামনে খোলামেলা থাকবে। ছাগলের জন্য আলাদা খামার তৈরি করতে হবে যেখানে সেখানে রাখলে তাদের ওজন সঠিকভাবে বৃদ্ধি পাবে না।
পূর্ণবয়স্ক বড় ছাগলের ঘরে 8 থেকে 9 বর্গফুট জায়গা প্রয়োজন এবং বাচ্চার রাম ছাগলের জন্য পাঁচ বর্গফুট জায়গা। এইজন্য তাদের আকার অনুসারে খামার তৈরি করতে হবে। ছাগলের ঘর খর অথবা ইটের তৈরি হতে হবে। তাদের ঘরে বাসের তৈরি মাচান রাখতে হবে। সেই মাচানের ওপর ছাগলকে রাখতে হবে ছাগলের রোগবালাই কম হবে।
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা
ছাগলকে পরিষ্কার পরিছন্ন রাখতে হবে। পরিষ্কার পরিছন্নতা ঈমানের অঙ্গ যদি পশু পাখিকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন না রাখেন তাহলে তারা বারবার বিভিন্ন রোগ বালাই দ্বারা আক্রান্ত হয়ে পড়বে এতে তাদের ওজন সঠিকভাবে বাড়বে না এবং সঠিক সময়ে বাচ্চা দিবে না। এজন্য সব সময় তাদের খামার পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। সপ্তাহে দুই থেকে তিন বা তাদেরকে গোসল করাতে হবে।
ছাগলের বাসস্থান
ছাগলের বাসা স্যার সবসময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন এবং দুর্গন্ধ মুক্ত রাখতে হবে তাদের ঘরে আলো বাতাস প্রবেশ করে এমন জায়গায় তাদেরকে স্থান দিতে হবে। বেশিরভাগ মানুষই ছাগলদের স্যাত স্যাতে জায়গায় রাখেন। এজন্য সঠিক সময়ে তাদের ওজন বৃদ্ধি পায় না। ছাগলকে শুকনো এবং দুর্গন্ধ মুক্ত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশে রাখতে হবে। এতে রোগবালাই কম হবে।
রামছাগলকে অপরিষ্কার এবং অপরিচ্ছন্ন জায়গায় রাখলে তাদের নিউমোনিয়া চর্মরোগ এবং ডায়রিয়া ও পাতলা পায়খানা সহ আরো বিভিন্ন রোগ বালাই হয়। তাই তাদের সঠিক পুষ্টিতে এবং দ্রুত ওজন বাড়াতে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন বাসস্থানে রাখতে হবে।
বাংলাদেশে বেশিরভাগ মানুষই এখন ছাগল লালন পালন করেন কারণ এটি বেশ লাভজনক ব্যবসার মধ্যে একটি। অন্যান্য ব্যবসা শুরু করতে যেমন মোটা টাকা মূলধনের প্রয়োজন ছাগলও একইভাবে ক্রয় করতে মূলধনের প্রয়োজন। অন্যান্য ব্যবসায় ক্ষতি সম্মুখীন হতে হলেও ছাগলের ব্যবসা কখনো ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয় না।
যারা গ্রামে বসবাস করেন তারা বেশিরভাগ মানুষের বাসায় ছাগল গরু মুরগি লালন পালন করেন। যারা নতুন ছাগল লালন পালন করতে চাচ্ছেন তারা হয়তো অনেকেই জানেন না যে ছাগলকে কেমন বাসস্থানে রাখতে হবে কেমন খাবার দিলে দ্রুত তাদের ওজন বাড়বে। উপরে আমরা ছাগলের বাসস্থান এবং রাম ছাগলের পালন পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা করলাম। এবার চলুন দেখে আসি যমুনাপারি ছাগল কাকে বলে?
যমুনাপারি ছাগল কাকে বলে?
রাম ছাগলের আর এক নাম হল যমুনাপারি ছাগল। রাম ছাগল হল সবচেয়ে উন্নতমানের ছাগল বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রজাতি ছাগল দেখতে পাওয়া যায় তাদের মধ্যে সবচেয়ে উন্নত এবং বিদেশী ছাগল হল রাম ছাগল রাম ছাগল ইন্ডিয়া থেকে আনা হয় এবং ভারতের উত্তরপ্রদেশে সবচেয়ে বেশি রাম ছাগল দেখতে পাওয়া যায়।
রাম ছাগলকে যমুনাপারি ছাগল বলা হয় কারণ সর্বপ্রথম যমুনা নদীর পাশে এদের বাসস্থান ছিল। এইজন্য এদের নাম দেওয়া হয় যমুনাপারি ছাগল তবে বেশিরভাগ মানুষ এদের রামছাগল বলে চিনেন। রামছাগল অতি দ্রুত বাচ্চা দেয় এবং এদের বংশবিস্তার দ্রুত ঘটে এজন্য বেশিরভাগ খামার ব্যবসায়ীরা রাম ছাগল লালন পালন করেন। রামছাগল লালন পালন করে দ্রুত লাভবান হওয়া যায়।
কত বছরে রাম ছাগল বাচ্চা দেয়
অনেকেই জিজ্ঞাসা করেন যে কত বছরে রামছাগল বাচ্চা দেয়? অর্থাৎ একটি ছাগল লালন পালন করে কত বছর বয়সে এসে বাচ্চা দেওয়া শুরু করবে? একটি রামছাগল প্রতি বছরে বাচ্চা দেয়। একবার বাচ্চা দেওয়ার পর আবারো এক মাসের মধ্যে এসে হিটে আসে এবং গর্ভধারণ করে।
একটি রাম ছাগল সাধারণত 7 থেকে 8 মাসেই গর্ভধারণ করে। একটি সাধারণ ছাগল ৯ থেকে ১০ মাসে অথবা 1 বছরে গর্ভধারণ করে। রাম ছাগল দ্রুত গর্ভ ধারণ করে এবং দ্রুত হিট আসে যখন একটি ছাগল হিটে আসে তখন সে গর্ভধারণ করে এবং সাধারণ ছাগল এক বছরের গর্ভধারণ করে।
কিন্তু একটি রাম ছাগলের বাচ্চা লালন পালন করে যখন তার বয়স ৭ থেকে ৮ মাস হবে তখন সেই হিটে আসবে এবং গর্ভধারণ করবে। একটি রামছাগল গর্ভধারণ করে কত দিনে বাচ্চা দেয়? নিচে দেখে নিন রাম ছাগল কত দিনে বাচ্চা দেয়?
রাম ছাগল কত দিনে বাচ্চা দেয়
আপনি কি জানেন রাম ছাগল কত দিনে বাচ্চা দেয়? নতুন ছাগল ব্যবসায়ী বা যারা নতুন ছাগল লালন পালন করছেন তারা অনেকেই জানেন না যে রাম ছাগল কত দিনে বাচ্চা দেয়? একটি ছাগল সাধারণত ১০ থেকে ১১ মাসে বাচ্চা জন্ম দেয়। ছাগল গর্ভবতী হওয়ার পর সাধারণ এরা ১৬০ দিনে বাচ্চা দেয়। ১৬০ দিন = ৫ মাস ১০ দিন।
এখন প্রশ্ন হল রামছাগল কত দিনে বাচ্চা দেয়? একটি রামছাগল গর্ভবতী হওয়ার পর ১৪০ থেকে ১৪৫ টেনে বাচ্চা জন্ম দেয়। একটি রামছাগলের বয়স যখন ৭ থেকে ৮ মাস তখন সে হিটে আসে এবং গর্ভবতী হয়। একটি গর্ভবতী রামছাগল ১৪০ দিন = ৪ মাস ২০ দিন পর বাচ্চা জন্ম দেয়।
বাংলাদেশে বেশিরভাগ গ্রামে বসবাসকারী মানুষ ছাগল লালন পালন করে কারণ বাংলাদেশের প্রাণিসম্পদের গুরুত্ব অধিক বিশ্বের ছাগল পালনের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান রয়েছে চতুর্থতম। বিশ্বে আদিকাল থেকে বাংলাদেশের ছাগল লালন পালন করা হচ্ছে। রামছাগল এবং ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলগুলো ভারত থেকে আমদানি করা হয় এগুলো ভারতে উত্তরপ্রদেশে সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায়।
এই দেশের আবহাওয়ায় রামছাগল খুব সহজে লালন পালন করা যায়। এবং বাংলাদেশে মৌসুমি আবহাওয়া বিরাজ করায় দ্রুত রামছাগল এর ওজন বারে এবং তারা বাচ্চা জন্ম দেয় বাংলাদেশের ছাগল লালন পালন করে অতি দ্রুত বেশি মুনাফা অর্জন করা যায় এর জন্য গবেষকরা ছাগল ব্যবসাকে লাভজনক ব্যবসা বলেন।
ছাগলের মধ্যে নারী লিঙ্গ এবং পুরুষ লিঙ্গ রয়েছে। বাচ্চা প্রসব করে নারী লিঙ্গের ছাগল। এক্ষেত্রে রামছাগল অর্থাৎ রাম( পুরুষ ) যাদের ছাগল গুলো নারী লিঙ্গের ছাগলকে বাচ্চা প্রসব করতে সাহায্য করে। একটি রামছাগলের বয়স যখন সাত থেকে আট মাস হয় তখন তারা গর্ভবতী হয়। এবং গর্ভবতী হয়ে ১৪০ থেকে ১৪৫ দিনে বাচ্চা প্রসব করে।
আরো পড়ুন: অসুস্থতায় অনুপস্থিতির আবেদন পত্র তৈরি করার নিয়ম জানুন
রাম ছাগল কত দিনে বাচ্চা দেয়
রাম ছাগল কত দিনে বাচ্চা দেয়? রাম ছাগল ৭-৮ মাসে হিটে আসে এবং গর্ভবতী হয়। একটি রামছাগল ১৪০ থেকে ১৪৫ দিন বাচ্চা দেয়। রাম ছাগল প্রতি বছরে বাচ্চা দেয়। একবার বাচ্চা প্রসব করার পর আবারো ১ মাসে নতুন ভাবে গর্ভবতী হয়ে বাচ্চা দিতে পারবে।
প্রিয় পাঠক আশা করছি আপনারা ক্লিয়ার বুঝতে পেরেছেন যে একটি রাম ছাগল কত দিনে বাচ্চা দেয়? এবার চলুন দেখে নেওয়া যাক রাম ছাগল এর দানাদার খাদ্য সমূহ সম্পর্কে।
রাম ছাগলের দানাদার খাদ্য তালিকা
রাম ছাগলকে দানাদার খাদ্য খেতে দিলে তাদের দ্রুত ওজন বৃদ্ধি পায় এবং দ্রুত বাচ্চা দেয় এর জন্য গর্ভকালীন সময়ে রাম ছাগলকে বেশি বেশি দানাদার খাদ্য দিতে হবে। গর্ভকালীন সময়ে দানাদার খাদ্যের সংকট দেখা দিলে বাচ্চাও শোপুষ্ট হয়ে জন্ম নিবে না। রামছাগলকে গর্ভকালীন সময়ে নিচের এই খাবারগুলো খেতে দিতে হবে।
- গমের ভুসি
- তিলের খইল
- বাদাম
- ভুট্টা
- ছোলা
- খনিজ মিশ্রণ
- খাদ্য লবন
- গম ভাঙ্গা
- চালের গুঁড়ো
- মাছের গুড়ো
- কাটা বুট
- চিরা
- সয়াবিন
- মুগের ডাল
- চিনাবাদাম
- রাই
- কর্নফ্লেক্স
উপরের এই দানাদার খাদ্যগুলো রাম ছাগলের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। গর্ভকালীন সময়ে বেশি বেশি কার্বোহাইড্রেট প্রোটিন এবং ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার খেতে দিতে হবে এতে তাদের শরীরে পুষ্টি সমৃদ্ধ থাকবে এবং সন্তান দ্রুত জন্ম দিবে। সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার উপরের এই খাবারগুলো তাদেরকে খেতে দিতে হবে।
গর্ভকালীন সময়ে রাম ছাগলদের বেশি বেশি মাছের গুঁড়ো খেতে দিতে হবে। মাছের গুঁড়ো থেকে উচ্চমাত্রায় প্রোটিন পাওয়া যায়। প্রিয় বন্ধুরা আশা করছি আপনারা বুঝতে পেরেছেন রাম ছাগলের দানাদার খাদ্য তালিকা সম্পর্কে। এবার চলুন ঝটপট দেখে নেওয়া যাক রাম ছাগল চেনার উপায় সম্পর্কে।।
রাম ছাগল চেনার উপায়
আপনি কি রাম ছাগল চেনার উপায় খুঁজছেন? যারা নতুন রামছাগল লালন পালন করতে চান তাদেরকে অবশ্যই জানতে হবে যে রাম ছাগল দেখতে কেমন এবং রাম ছাগল চেনার উপায় কি কারণ বাজারে এমন অনেক ছাগল পাওয়া যায় যা দেখতে দাম ছাগলের মত এবং বাজারে বিভিন্ন প্রজাতির ছাগল দেখতে পাওয়া যায় তাদের মধ্যে রাম ছাগলকে চেনার উপায় না জানলে আপনি রাম ছাগল চিনতে পারবেন না। নিচে দেখে নিন রাম ছাগলের বিশেষ কয়েকটি বৈশিষ্ট্য দেওয়া রয়েছে যা দেখে তাদের সনাক্ত করা সম্ভব।
রাম ছাগলের শরীরের গঠন লম্বাটে হয় এবং এদের পা খুব লম্বা। এদের পায়ের পিছনের দিকে বড় বড় লোম থাকে যা এদের অন্যতম একটি বৈশিষ্ট্য। অন্যান্য সাধারণ ছাগলের পা এবং রামছাগলের পাপ অনেকটা আলাদা রামছাগলের পা লম্বাটে হয় এবং এদের পায়ের নিচের অংশে বড় বড় লোম থাকে।
রাম ছাগলের কান লম্বা প্রকৃতির হয় এবং এদের কান ঝুলন্ত হয়। রাম ছাগলের প্রধান বৈশিষ্ট্য হল এদের ৮ থেকে ১০ ইঞ্চির ঝুলন্ত কান রয়েছে। অন্যান্য ছাগলের কান স্বাভাবিক থাকে। কিন্তু রাম ছাগলের কানগুলো নিচের দিকে ঝুলন্ত। এটি তাদের প্রধান বৈশিষ্ট্যের মধ্যে একটি।
রাম ছাগির ওলান ামূলক বড় এবং সুগঠিত ও ঝুলন্ত হয়। ওলানের বাট গুলো অনেকটা মোটা এবং লম্বা প্রকৃতির হয় এবং এদের মাথার শিং চ্যাপ্টা ও লম্বা হয়। রামছাগলের শিংগুলো হালকা বাঁকা ধরনের হয়।
রাম ছাগলের উচ্চতা ৩৫-৪০ ইঞ্চি হয়। অন্যান্য ছাগলের তুলনায় এদের উচ্চতা এবং আকার আকৃতি বিশাল হয় যা দেখে বোঝা যায় এটি রাম ছাগল। রাম ছাগলের উচ্চতা ৪০ ইঞ্চি থেকে আরও অধিক হতে পারে।
একটি প্রাপ্তবয়স্ক রামছাগলের ওজন প্রায় ৮০-৯০ কেজি। বাংলাদেশী ছাগলের ওজন এত বেশি হয় না। বাংলাদেশী ছাগলের উচ্চতা এবং আয়তন রাম ছাগল এ তুলনায় কম হয়। রাম ছাগীর ওজোল সাধারণত ৫০ থেকে ৭০ কেজি হয়।
রামছাগল অন্যান্য ছাগলের তুলনায় অত্যন্ত চঞ্চল প্রকৃতির হয় এরা সবসময় চলাফেরা এবং ঘুরাঘুরি করতে ভালোবাসে এরা খামারে কম থাকে। শুধুমাত্র রাতের সময়টি এরা খামারে বসবাস করে। পাকিস্তানের একটি রামছাগল দেখতে পাওয়া গেছিল যার ওজন প্রায় ১৩০ কেজি।
রামছাগল ৭ থেকে ৮ মাস বয়স এই বাচ্চা প্রসব করা শুরু করে এবং একবার বাচ্চা প্রসব করে আবারো এক মাসের মধ্যেই হিটে আসে তারপর আবারো গর্ভধারণ করে। অর্থাৎ এরা বারবার গর্ভধারণ করে এবং বাচ্চা প্রসব করে এভাবে প্রতি বছরে একবার বাচ্চা প্রসব করে। এবং প্রতিবার এক থেকে দুইটি বাচ্চা প্রসব করে।
রাম ছাগলের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের তুলনায় অনেক কম হয় এই জন্য এরা দ্রুত অসুস্থ হয়ে পড়ে। তবে এদের যদি সঠিক পরিচর্যার এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন পরিবেশে রাখা হয় তাহলে রোগবালাই কম হয়।।
রাম ছাগলের অন্যতম একটি বৈশিষ্ট্য হল এরা প্রচুর দুধ প্রদান ক্ষমতা। একটি রামছাগল প্রতিদিন প্রায় ১.৮ কেজি থেকে ২.২ কে যে দুধ দেয়। একটি সাধারণ ছাগলের পক্ষে এত পরিমান দুধ দেওয়া সম্ভব নয় এটি শুধুমাত্র রাম ছাগলের পক্ষে সম্ভব।
ওপরের এই বৈশিষ্ট্যগুলো হল রাম ছাগল এর। একটি রামছাগল দেখে আপনি কিভাবে বুঝবেন এটি কোন প্রজাতির ছাগল? যদি তার কান ঝুলানো হয় এবং অনেক লম্বা হয় তার ওলানের আকার অনেক বড় এবং তার শরীর অনেক বেশি লম্বাটে ও উচ্চতা সম্পন্ন হয় তাহলে এটি রাম ছাগল। রাম ছাগলের প্রধান বৈশিষ্ট্যের মধ্যে এই তিনটি বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা দেখে রাম ছাগলকে সনাক্ত করা সম্ভব।
প্রিয় পাঠক আশা করছি আপনারা বুঝতে পেরেছেন রাম ছাগল চেনার উপায় কি এবার চলুন ছটফট দেখে নেওয়া যাক রাম ছাগল বাচ্চার দাম কত
রাম ছাগলের বাচ্চার দাম কত
একটি রামছাগলের বাচ্চার দাম তার বয়স এবং তার উচ্চতার ওপর নির্ভর করে। অনেকে জিজ্ঞাসা করেন যে রামছাগল বাচ্চার দাম কত? যারা রামছাগল বাচ্চা ক্রয় করে বাসায় লালন পালন করতে চান তাদেরকে জানতে হবে যে রামছাগল বাচ্চার দাম কত? একটি সাধারণ ছাগলের বাচ্চার দাম ১০০০ থেকে শুরু করে ৫০০০ টাকা। একটি রামছাগল বাচ্চার দাম তোদের মত একটু বেশি যেহেতু রামছাগলের জাত অনেক উন্নত। তাই একটি রামছাগল বাচ্চার দাম ৪ হাজার থেকে শুরু হয় এবং 7000 টাকা পর্যন্ত। ছোট রামছাগল বাচ্চার দাম ৩ হাজার টাকা।
লেখকের শেষ মন্তব্য
প্রিয় পাঠক আজকের এই আর্টিকেলে আমরা দেখলাম রাম ছাগল চেনার উপায়, রাম ছাগল কত বছরে বাচ্চা দেয়, রাম ছাগলের খাদ্য তালিকা এবং রাম ছাগল বাসস্থান সহ রাম ছাগল বাচ্চা দাম কত সেই সমস্ত বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করলাম। বাংলাদেশে বিভিন্ন জাতের ছাগল দেখতে পাওয়া যায় তার মধ্যে সবচেয়ে উন্নতমানের ছাগল হল রাম ছাগল এটি ভারত থেকে আমদানি করা হয় ভারতের উত্তর প্রদেশে রামছাগল সবচেয়ে বেশি দেখতে পাওয়া যায়।
অন্যান্য ছাগলের তুলনায় রাম ছাগলের আকার আকৃতি এবং গুণগতমান সবদিক থেকে উন্নত অন্যান্য ছাগলের তুলনায় রামছাগলের ওজন উচ্চতাও বেশি। একটি সাধারণ ছাগল সর্বোচ্চ ৪০ থেকে ৫০ কেজি অথবা ৬০ কেজি হয় কিন্তু একটি রামছাগল সর্বনিম্ন ৬০ ৭০ কেজি থেকে শুরু হয়। গত বছর পাকিস্তানে একটি রামছাগল দেখা গেছিল এবং সেই ছাগলের ওজন ছিল প্রায় 120 কেজি।
অন্যান্য ছাগলের তুলনায় রাম ছাগলের বৈশিষ্ট্যের ভিন্নতা রয়েছে। রাম ছাগলের পায়ে বড় বড় লোম রয়েছে এবং রাম ছাগলের কান ঝুলানো এবং লম্বাটে হয়। আজকের এই আর্টিকেলে রামছাগল সম্পর্কে সবকিছু বিস্তারিত আলোচনা করলাম আশা করছি আজকের এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে আপনারা উপকৃত হয়েছেন।